Sunday, May 11, 2014

আট প্রকার ভক্তির বিবরণ।

By Debashish Chakraborty on Saturday, February 22, 2014 at 9:54pm
ঠাকুর আট  রকম ভক্তির কথা বলতেন। সেই আঁট প্রকার ভক্তি হলঃ- ১)জ্ঞান ভক্তি ২)বৈধী ভক্তি ৩) প্রেমা ভক্তি ৪)  বিজ্ঞান ভক্তি ৫) শুদ্ধা ভক্তি। ৬) অহৈতুকী ভক্তি, ৭)ঊর্জিতা ভক্তি, ৮)মধুরা ভক্তি

১)ঠাকুর আছেন এবং আমি তাঁর সন্তান এইটি শাস্ত্র গ্রন্থ বা গুরুমুখ থেকে জেনে নিয়ে সেই ভাবে-সেই বিশ্বাসে আধারিত হয়ে ঠাকুরের আরাধনা এই প্রকার ভক্তিকে জ্ঞান ভক্তি বলে। ভগবান লাভের জন্য গুরুবাক্য বা শাস্ত্র-উপদেশে বিশ্বাস স্থাপন করা প্রয়োজন।

২)ভক্তি যেখানে বিধির উপর আশ্রিত তাকে বৈধী ভক্তি বলে, যেমন এত হাজার জপ, অমুক তীর্থ দর্শন, এত পুনশ্চরন করা, এত ব্রাহ্মন ভোজন করানো ইত্যাদি।এইরুপ বিধিবাদীর ভক্তি আচরণ করতে করতে ক্রমে ভগবানের উপর ভালবাসা আসে।

৩) প্রেমা ভক্তিঃ বৈধী ভক্তির চর্চা করতে করতে প্রেমা ভক্তির উদয় হয়, এই ভক্তি এলে আর বিধি নিয়মের দরকার নেই।এ অতি উচ্চ স্তরের ভক্তি, এই ভক্তি দিয়ে ভগবান কে বাঁধা যায়, কিন্তু এই ভক্তি লাভ করা বড় কঠিন,। এ ভক্তির আড়ম্বর নেই, ভক্তের কাছে ভগবান চান ফুল,পাতা ফল জল, যা সহজেই পাওয়া যায়। শ্রী ভগবান বলেছেন "শুদ্ধ চিত্ত ভক্ত প্রেমাভক্তির সাথে আমাকে ফুল পাতা ফল জল অর্পণ করলে তার সেই উপহার আমি গ্রহন করি।" ঠাকুর বলতেন " ভগবান কে যা কিছু অর্পণ করবে অনুরাগের সাথে করা চাই। পত্র পুষ্প ইত্যাদি সব টি তো তাঁর, আমার কি রইলো তার সঙ্গে? আমাদের প্রীতি ভালবাসাটুকু মিশিয়ে দিতে হবে। ভগবান সেইটি দেখেন। ঐশ্বর্যের ভাব থাকলে ভালবাসা চাপা পড়ে যায়, ঐশ্বর্যের মধ্যে মাধুর্য থাকে না।

৪) বিজ্ঞান ভক্তিঃ- ব্রহ্ম জ্ঞান লাভের পর যারা 'বিদ্যার আমি' রেখে ভগবৎ লীলা আস্বাদন করেন, আর লোকশিক্ষার জন্য করেন, তাঁদের বিজ্ঞান ভক্তি। যেমন নারদাদি। ভগবান লাভের পর যে করম-তাতে কত আনন্দ! তখন ভগবান লাভ হয়ে গেছে, ভক্ত ভগবানের মধ্যে রয়েছে।

৫) শুদ্ধা ভক্তি ঃ- গোপী দের ভক্তি শুদ্ধা ভক্তির উদাহরণ, সংসার বন্ধন থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য শুদ্ধা ভক্তি বা নিষ্কাম ভক্তি। ঠাকুর বলতেন যে তিনি শুদ্ধা ভক্তি দিতে কাতর। শুদ্ধা ভক্তি দুর্লভ।

৬) অহৈতুকী ভক্তিঃ  যেখানে কোনও কামনা নেই, তাকাকরি নামযশ এসব কিছুর চাহিদা নেই, শুধু ভালবাসার জন্য ভক্তি, তাকে অহৈতুকী ভক্তি  বলে। প্রহ্লাদের এই ভক্তি ছিল। ঠাকুর জগদম্বার কাছে এই শুদ্ধা অমলা নিষ্কাম অহৈতুকী ভক্তি  চেয়ে ছিলেন, এই ভক্তিতেই তিনি মাকে বেঁধেছিলেন।

৭)ঊর্জিতা ভক্তি ঃ-এই ভক্তি অনেক উচ্চ স্তরের  জিনিস, এতে ভক্ত হাঁসে কাঁদে নাচে গায়, যেমন অবস্থা চৈতন্য দেবের, ঠাকুরের হয়েছিল। ঠাকুর বলেছেন " যদি কারো ঊর্জিতা ভক্তি  হয়, নিশ্চয় জেনো ঈশ্বর সেখানে স্বয়ং বর্তমান।"

৮)মধুরা ভক্তিঃ-  দাস্য সখ্য প্রভৃতি সব্রকম ভাবের সমন্বয় হলে এই ভক্তির উৎপন্ন হয়,এ ভক্তি শ্রী মতী রাধারানীর হয়েছিল। অশ্রু স্তম্ভ পুলক  বৈবর্ণ্য  ও দিব্যন্মাদ- শ্রীমতীর যেরূপ হয়েছিল। জীবের এ ভাব হয় না, এই ভক্তি ই চরম ভক্তি।

No comments:

Post a Comment